সোনালী কবুতরের গল্প।The story of the golden pigeon.💕😍
সোনালী কবুতরের বন্ধুত্ব: রাজুর জীবনের রূপকথা !
একটা ছোট্ট গ্রামে একটি সুন্দর কবুতর বসবাস করত। তার নাম ছিল সোনা। সোনা ছিল এক বিশেষ কবুতর, কারণ তার দেহের পালকগুলো রোদের আলোয় সোনার মত ঝলমল করত। গ্রামের সবাই তাকে ভালোবাসত এবং আদর করত।
প্রতিদিন সকাল বেলা সোনা গ্রামের চারদিকে উড়ে বেড়াত, কখনও মাঠের উপর দিয়ে, কখনও বা গ্রামের কাঁচা রাস্তা দিয়ে। তার উড়ন্ত দেহ দেখে গ্রামের শিশুদের মন আনন্দে ভরে উঠত। তারা হাততালি দিয়ে সোনাকে স্বাগত জানাত।
একদিন, সোনা উড়ে উড়ে গ্রামের এক প্রান্তে পৌঁছালো। সেখানে সে একটি ছোট্ট ছেলেকে দেখতে পেল, যার নাম ছিল রাজু। রাজু ছিল খুবই দুঃখী, কারণ তার মা অসুস্থ ছিলেন। সোনা রাজুর কাছে গিয়ে বসলো এবং তার চোখে চোখ রেখে মৃদু মৃদু কু কু শব্দ করলো। রাজু সোনার মাথায় হাত বুলিয়ে তাকে বলল, "তুমি কত সুন্দর, সোনা। ইশ! যদি আমি তোমার মত উড়তে পারতাম, তাহলে আমার সব দুঃখ ভুলে যেতাম।"
সোনা যেন রাজুর কথা বুঝতে পারলো। সে তার ডানা মেলে দিল এবং রাজুকে তার পিঠে বসার ইশারা করলো। রাজু অবাক হয়ে প্রথমে দ্বিধা করলেও পরে সাহস করে সোনার পিঠে বসলো। সোনা তখন ডানা মেলে আকাশে উড়তে শুরু করল। রাজুর মন আনন্দে ভরে উঠল। সে প্রথমবারের মত আকাশ থেকে তার গ্রাম, মাঠ, নদী সবকিছু দেখতে পেল।
সেদিন সোনা রাজুকে এক নতুন পৃথিবী দেখালো। রাজু বুঝতে পারল, জীবনের দুঃখ-কষ্টের মাঝেও আনন্দের মুহূর্ত আসে, যদি আমরা আমাদের মনকে একটু উন্মুক্ত করি।
ফিরে এসে রাজু তার মায়ের কাছে সব কিছু বলল। মা হাসিমুখে বললেন, "তুমি তো জানো, সোনা শুধু একটি পাখি নয়, সে আমাদের গ্রামের সৌভাগ্যের প্রতীক। তোমার মন ভালো করে তোলার জন্যই সে এসেছে।"
এরপর থেকে রাজু আর কখনও দুঃখী হয়নি। সোনা প্রতিদিন তার সাথে দেখা করতে আসত এবং তারা একসাথে অনেক মজার সময় কাটাতো। রাজু নতুন করে জীবনকে উপভোগ করতে শিখল এবং তার মা-ও ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠলেন।
এইভাবে সোনা তার ভালোবাসা আর বন্ধুত্ব দিয়ে রাজুর জীবনকে আলোকিত করেছিল। গ্রামবাসীরা সবসময় সোনাকে স্নেহের সাথে দেখত এবং জানত, এই সোনালী কবুতর তাদের সুখ-শান্তির দূত।
কোন মন্তব্য নেই